রমযান মাসের পরিপূর্ণ বরকত, রহমত ও ফযীলত হাসিলের কিছু উপায়……..
মাহে রমযান বছরের বাকি এগারো মাস অপেক্ষা অধিক মর্যাদাশীল ও বরকতপূর্ণ।
আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদে ইরশাদ করেন,
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآَنُ هُدًى لِلنَّاسِ
অর্থ : ‘রমযান মাসই হল সে মাস যাতে নাযিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়াত ।’ [সূরা বাকারা : আয়াত-১৮৫]
হাদীস শরীফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘‘যখন রমযানের আগমন হয় তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর শয়তানদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়।’’ [বর্ণনায়……বুখারী রহ.] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আল্লাহ তাআলা প্রত্যহ ইফতারের সময় অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।’’ [মুসনাদে আহমদ]
এ মাস হচ্ছে হেদায়েত লাভের মাস।
আল্লাহ তাআলার রহমত লাভের মাস এবং জাহান্নাম থেকে নাজাত হাসিলের মাস।
সুতরাং বেশি বেশি ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করা
এবং তাওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমে মুক্তির সনদ লাভে সচেষ্ট হওয়া কর্তব্য।
এ মাসের রোযাকে আল্লাহ তাআলা ফরয করেছেন।
যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“হে ঈমানদারগণ ! তোমাদের উপর রোযা ফরজ করা হয়েছে,
যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্বপুরুষদের উপর,
যাতে তোমরা আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করতে পার।”
তাই প্রত্যেক সুস্থ্য ও বালিগ মুসলিম নর-নারীর জন্য রোযা রাখা অপরিহার্য।
বলাবাহুল্য যে, ফরয ইবাদতের মাধ্যমেই বান্দাহ আল্লাহ তাআলার সর্বাধিক নৈকট্য অর্জন করে।
রমযানের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে তারাবী। রমযানের বরকতময় রজনীতে
যত্নের সঙ্গে বিশ রাকাত তারাবীর নামায আদায়ে যত্নবান হওয়া উচিত।
রমযান মাস হচ্ছে কুরআন নাযিলের মাস।
এ মাসে লওহে মাহফূয থেকে প্রথম আসমানে কুরআন মজীদ নাযিল হয়েছে,
তাই কুরআন মজীদ শ্রবণের জন্য এবং এই পুণ্যময় রজনীতে আল্লাহর সান্নিধ্যে
দণ্ডায়মান হওয়ার জন্য তারাবী নামাযের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া কর্তব্য।
অন্য সময়ও ব্যক্তিগতভাবে অধিক পরিমাণে কুরআন মজীদ তেলাওয়াত করা উচিত।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তাহাজ্জুদ নামায।
এ মাসে যেহেতু সাহরী খাওয়ার সুবাদে সুবহে সাদিকের পূর্বেই সবাইকে উঠতে হয়,
তাই এ সুযোগে তাহাজ্জুদের নামাজের প্রতি বেশী নজর দেয়া উচিত এবং সহজ কাজ।
হাদীস শরীফে তাহাজ্জুদের অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে।
আরেকটি আমল হলো সাধ্যমতো দান-সদকা করা।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসে অনেক বেশি দান-সদকা করতেন।
এসব নেক আমলের পাশাপাশি গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করাও অপরিহার্য।
রমযান মাস হচ্ছে তাকওয়া ও পরহেযগারী অর্জনের মাস।
আল্লাহ তাআলা রোযাকে ফরযই করেছেন তাকওয়া অর্জনের জন্য।
হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় যে, গুনাহ থেকে সর্বোতভাবে বেঁচে থাকা ছাড়া রোযাপূর্ণাঙ্গ হয় না।
তাই রোযাকে নিখুঁতভাবে আদায়ের উদ্দেশ্যে মুমিন যখন গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে,
তখন আল্লাহ তাআলা নিজ অনুগ্রহে তাকে তাকওয়া ও পরহেযগারীর শক্তি দান করেন।
এজন্য সকল গুনাহ থেকে, বিশেষ করে গীবত, হিংসা, চুগলখুরী, কুদৃষ্টি, কু-চিন্তা,
হারাম পানাহার ইত্যাদি থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলিমের একান্ত কর্তব্য।
নিজে জানুন ও অপরকে ইসলামের বিধি-বিধান জানতে শেয়ার করুন।
আল্লাহ আমাদের নেক আমল ও নেক নিয়ত কবুল করুন । আমীন।
__ সংগৃহিত ____