মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বাণী – ১
- কোন ব্যক্তি সে পযর্ন্ত মৃত্যুবরণ করবে না, যে পযর্ন্ত না তার ভাগ্যে লিখিত শেষ খাদ্যকণাটুকু আহার না করে । (আল হাদিস)
- যে হজ্জ করল অথচ আমার রওজা মোবারক জিয়ারত করল না সে আমার সাথে বেয়াদবী করল। -(আল হাদীস)
- যে ব্যক্তি শবে-কদরের রাতে ইবাদতে দন্ডায়মান থাকে, তার অতীতের সব গুনাহ
মাফ হয়ে যায়। যে ব্যক্তি শবে-কদরের কল্যাণ ও বরকত থেকে বঞ্চিত থাকে, সে
প্রকৃতই বঞ্চিত ও হতভাগ্য। (বোখারী , মুসলিম) - আমি তোমাদের বেলায় সবচেয়ে ভয় করি ছোট শিরককে। ছোট শিরক হলো রিয়া অর্থাৎ
লোক দেখানো ইবাদত। শেষবিচারের দিন যখন আল্লাহ পাক মানুষকে তাদের সৎকর্মের
পুরস্কার দিবেন তখন তিনি লোক দেখানো ইবাদতকারীদের বলবেন, তোমরা সেই লোকদের
নিকট যাও দুনিয়াতে যাদের দেখানোর জন্যে ইবাদত করতে এবং দেখো তাদের কাছ থেকে
কোনো পুরস্কার পাওয়া যায় কিনা। -(মুসনাদে আহমদ) - তোমরা মৃত্যু সম্পর্কে যেমন জান পশু-পাখিরা যদি তদ্রুপ জানতে পারত, তবে
মানুষেরা কখনও মোটাতাজা পশু-পাখির মাংস ভক্ষণ করতে পারতে না। (আল হাদিস) - যে ব্যক্তি জুমু’আর দিনে সুরা কাহ্ফ পাঠ করবে, কেয়ামতের দিন তার জন্য
আরশের নীচে আসমান সমান উঁচু একটি নূর প্রকাশ পাবে যদ্বারা হাশরের ময়দানে
তার সকল অন্ধকার দূর হয়ে যাবে এবং গত জুমু’আ থেকে এ জুমু’আ পযর্ন্ত তার যত
গুনাহ সব মাফ হয়ে যাবে। -(আল হাদিস) - গোপনে দান-খয়রাত আল্লাহর ক্রোধকে নিবারণ করে। বান্দা গোপনে কোন কাজ করলে
আল্লাহ তা গুপ্ত খাতায় লিখে রাখেন। পরে বান্দা যদি তা প্রকাশ করে, তবে
আল্লাহ তাকে গোপন খাতা থেকে মুছে প্রকাশ্য খাতায় লিখেন। তারপর বান্দা যদি
তার সে কাজের কথা আরও প্রকাশ করে, আল্লাহ তার নাম প্রকাশ্য খাতা থেকে মুছে
রিয়ার (লোকদেখানো) খাতায় লিখে দেন। (আল হাদিস) - কেয়ামতের পূর্বে মানুষ যে সব বিপদের সম্মুখীন হবে, তার মধ্যে দাজ্জালের আবির্ভাব সবচেয়ে বড়। – (মুসলিম শরীফ)
- মোমেন বান্দার মৃত্যুর পর কবরস্থান নিজেকে সেই মোমেনের জন্য সজ্জিত করে
এবং কবরস্থানের প্রতিটি অংশই চায় যে তার মধ্যে সেই বান্দাকে দাফন করা হউক।
-আল হাদীস - দুনিয়া ত্যাগের অর্থ এই নয় যে তোমরা হালালকৃত বস্তুকে নিজেদের জন্য হারাম
করে নেবে অথবা নিজেদের ধন-সমপদ অনর্থক উড়িয়ে দেবে। বরং দুনিয়া ত্যাগের
অর্থ হলো, তোমাদের নিকট যা আছে তার তুলনায় আল্লাহর কাছে যা রয়েছে তার ওপর
তোমরা বেশী ভরসা করবে। (তিরমিযী) - অকস্মাৎ তোমার দ্বারা কোন গুনাহর কাজ অনুষ্টিত হয়ে গেলে সাথে সাথে একটি
পূণ্যের কাজ করে ফেল, ফলে এই পূর্ণ্যকর্মটি পূর্ববর্তী গুনাহর কাজটিকে মুছে
ফেলবে। (আল হাদিস) - প্রত্যেক জুমআর দিন মহান আল্লাহ তাঁর ছয় লক্ষ বান্দাকে দোযখ থেকে মুক্তি
দিয়ে থাকেন। যে ব্যক্তি জুমআর দিন মৃত্যুবরণ করে আল্লাহ তাকে শহীদের
মর্যাদা দান করেন এবং তাকে কবরের আযাব থেকে বাঁচিয়ে রাখেন। (আল হাদিস) - যে ব্যক্তি লজ্জা-শরমের বাঁধন ছুড়ে ফেলেছে, তার গীবত হবে না। (আল হাদিস)
- একটি খেজুরের অর্ধাংশ দিয়ে হলেও জাহান্নাম থেকে বাঁচ, আর যদি তাও না থাকে
(ভিক্ষুকের সাথে) মিষ্টি কথা বলে স্বীয় নিরাপত্তা রক্ষা কর। যে মুসলমান
ব্যক্তি তার হালাল উপার্জন থেকে দান-খয়রাত করেন, আল্লাহ তাঁর ডান হাত দিয়ে
তা গ্রহন করেন। অতঃপর তাকে লালন-পালন করেন যেমনভাবে তোমরা উটের বাচচা
লালন-পালন কর। ফলে এক সময় সেই দানের সওয়াব ওহুদ পাহাড়ের সমতুল্য বিরাট হয়ে
দাড়ায়। -(আল হাদিস) - কোন ব্যভিচার ব্যতিত সত্রীদের তালাক দিও না। কেননা, যে সব নরনারী (বিয়ে
করে) কেবল মজা লুটার জন্য, আল্লাহ তাদের পছন্দ করেন না। (আল হাদিস) - যখন সারা দুনিয়া অন্যায়-অত্যাচার ও অশানিততে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে, তখন আমার
বংশধরদের মধ্যে এক ব্যক্তি আবির্ভুত হবে যার নাম আমার নামে এবং যার পিতার
নামও আমার পিতার নামে হবে। সারা পৃথিবীর ওপর সাত বৎসর তাঁর কর্তৃত্ব থাকবে।
এসময় তার সুশাসনের ফলে অনাচারে ভরা পৃথিবীতে পুণরায় সুবিচার ও শানিত
প্রতিষ্টিত হবে। – (আবু দাউদ শরীফ) - নেক আমলের দ্বারা ছোট গোনাহ্সমূহ মাফ হয়ে যায়। -(আল হাদিস)
- কৃত পাপের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হওয়ার নামই হলো তওবা। পশ্চিম দিক হইতে
সূর্য ওঠার পূর্বে যে ব্যক্তি তার কৃত পাপের জন্য আল্লাহর নিকট তওবা করবে
তার তওবা কবুল হবে। আমি দিনে-রাতে একশত বার তওবা করে থাকি। (আল হাদিস) - আল্লাহর নিকট কল্যাণ ও বরকত লাভের নিমিত্তে প্রার্থনা না করা দুর্ভাগ্যের লক্ষণ। -(আল হাদীস)
- পাঁচটি প্রশ্নের জবাব না দেওয়া পযর্ন্ত হাশরের মাঠে কেউ এক পা-ও সম্মুখে
অগ্রসর হতে পারবে না (১) জীবনের দিনগুলো সে কি কাজে ব্যয় করেছে (২) সে তার
যৌবন কি কাজে ব্যয় করেছে (৩) সে তার ধন-সমপদ কোন পন্থায় উপার্জন করেছে (৪)
সে তার উপার্জিত অর্থ কোন পথে ব্যয় করেছে (৫) অর্জিত এলেম অনুযায়ী কতটুকু
আমল করেছে। (বোখারী) - পাঁচ ওয়াক্তের নামায কারো ঘরের সামনে দিয়ে প্রবাহিত নির্মল পানির
স্রোতস্বিনীর ন্যায় যার স্বচছ পানিতে উক্ত গৃহবাসী দৈনিক পাঁচ বার গোসল করে
থাকে। দৈনিক পাঁচ বার গোসল করার পরে কারো শরীরে ময়লা থাকতে পারে কি ?
পরিস্কার পানি যেমন শরীরের ময়লা দূর করে, তেমনি পাঁচ ওয়াক্তের নামাযও
যাবতীয় পাপকে দূর করে থাকে। (আল হাদিস) - সন্তান জন্মের পর পিতার ওপর তিনটি দ্বায়িত্ব অর্পিত হয় ঃ- (১) সনতানের
ভাল নাম রাখা , (২) সন্তানকে সুশিক্ষা দান করা এবং (৩) প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার
পর তার বিবাহ দেওয়া। অন্যথায় সে কোনো গুনাহের কাজে লিপ্ত হলে পিতাকে
অভিযুক্ত করা হবে। -(বায়হাকী) - দুনিয়াতে শিশুকালে বা বৃদ্ধ বয়সে যে সব জান্নাতি লোক মারা যায়, সে
জান্নাতে প্রবেশ করবে ত্রিশ বৎসরের যুবক হয়ে এবং তার বয়সের পরিমাণ কখনও
বাড়বে না। জাহান্নামবাসীরাও অনুরূপ হবে। -(আল হাদীস) - কবরের মধ্যে কাফেরদের শাস্তি দেওয়ার জন্য দুই জন বিকটাকার ফেরেশতা
নিযুক্ত থাকবেন। তারা উভয়ে অন্ধ এবং বধির। তাদের উভয়ের হাতে বিরাটাকারের
একটি করে দুরমুজ থাকবে। সেই দুরমুজের অগ্রভাগ উটকে পানি পান করানোর
প্রকাণ্ড বালতির মুখের ন্যায় হবে। সেই ফেরেশতাদ্বয় উক্ত দুরমুজ দিয়া কাফের
ব্যক্তিকে তাহার কবরের মধ্যে কিয়ামত পযর্ন্ত পিটাতে থাকবে। তাদের চক্ষু নাই
বিধায় তারা কাফের ব্যক্তির দুরবস্থা দেখতে পাবে না। ফলে তাদের মনে তার
প্রতি কোন দয়ারও উদ্রেক হবে না। তাদের কর্ণও নাই যে তারা কাফের ব্যক্তির
মর্মবিদারী চিৎকার শ্রবণে তাদের মনে দয়ার উদয় হবে। কাজেই কেয়ামত পযর্ন্ত
তাঁরা কেবল দুরমুজ দিয়া পিটাতেই থাকবেন। (আল হাদিস) - মানুষের উপর এমন একটা সময় আসবে যখন তার ধর্মের ওপর প্রতিষ্টিত থাকাটা
হাতে জ্বলন্ত কয়লা হাতে ধরে রাখার মতো কঠিন হবে। -(তিরমিযী শরীফ) - বিবাহ করা আমার সুন্নত। যে বিনা কারণে আমার সুন্নত ত্যাগ করবে, সে আমার উম্মত নয়। -(আল হাদীস)
- আল্লাহ পাক বলেনঃ আমি মঙ্গল ও অমঙ্গল সৃষ্টি করেছি। সেই ব্যক্তিই
সৌভাগ্যবান যাকে আমি ভাল কাজের জন্য সৃষ্টি করেছি এবং ভাল কাজ করাকে তার
জন্য সহজসাধ্য করে দিয়েছি। আর সেই ব্যক্তি হতভাগ্য যাকে আমি মন্দ কাজের
জন্য সৃষ্টি করেছি এবং মন্দ কাজ করাকে তার পক্ষে সহজসাধ্য করে দিয়েছি।
কিন্তু যে ব্যক্তি এই কূটতর্কে লিপ্ত আছে যে, আল্লাহ কেন এমন কাজ করলেন এবং
কেমন করে এরূপ কাজ করলেন, তার পরিণামের জন্য আফসোস ! (আল হাদিস) - আল্লাহ পাক কাবা গৃহকে বিশেষভাবে সম্মানিত ও গৌরবান্বিত করেছেন। যদি কোন
মানুষ দুর্ভাগ্যবশতঃ কাবা গৃহকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেলে এবং ইহার প্রতিটি
প্রস্তর খন্ডকে অগ্নিতে নিক্ষেপ করে তবে তার যে পাপ হবে, আল্লাহর কোন একজন
ওলীকে ঘৃণা ও তাচিছল্যের চোখে দেখলে তদপেক্ষা অনেক গুরুতর পাপ হবে। একজন
লোক জিজ্ঞাসা করল ঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ ! আল্লাহ তা’আলার ওলী কারা ? হুজুর
(দঃ) বললেন ঃ সকল সত্যিকারের মুসলমানই আল্লাহর ওলী। (আল হাদিস) - যে ব্যক্তি আমাকে দেখেছে জাহান্নামের আগুন তাকে স্পর্শ করবে না । (তিরমিযী)
- দুনিয়ার সমস্ত সম্পদ এবং গুপ্ত ধন-ভান্ডার আমাকে নিতে বলা হয়েছিল কিন্তু
আমি তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছি যে, হে প্রভু ! আমি একদিন অনাহারে থাকব এবং
একদিন পানাহার করব। যেদিন পানাহার করব সেদিন তোমার নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
করব আর যেদিন উপবাস থাকব সেদিন তোমার নিকট প্রার্থনা জানাব। (আল হাদিস) - শয়তান মানুষের শিরায় শিরায় চলাচল করে। তোমরা ক্ষুধা তৃষ্ণার মাধ্যমে তার
চলাচলের পথকে সঙ্কীর্ণ করে দাও। মানুষের অন্তরে যদি শয়তানের আনাগোনা না
থাকত, তবে মানুষ উর্দ্ধজগত দেখার মত দৃষ্টি শক্তি সম্পন্ন হয়ে যেত। (আল
হাদিস) - খাঁটি আলেমগণ যদি আল্লাহর ওলী না হন, তবে অন্য কেহই আউলিয়া হইতে পারে না। (বোখারী)
- তোমরা এই উম্মতকে সুসংবাদ দাও যে, পৃথিবীতে তারা উন্নতি ও সমৃদ্ধির
শীর্ষশিখরে আরোহন করবে এবং পৃথিবীর শাসন ক্ষমতা লাভ করবে। সুতরাং তাদের
মধ্যে যারা দুনিয়া লাভের উদ্দেশ্যে পরকালের আমল করবে, আখেরাতে তাদের নসীবে
কিছুই জুটবে না। -(হাকেম , বায়হাকী) - জ্বর-জ্বালা জাহান্নামের উত্তাপের আঁচস্বরূপ। যে মুসলমান দুনিয়াতে জ্বরের
তাপ ভোগ করেছে তাহাকে দোযখের উত্তাপ ভোগ করতে হবে না। (আল হাদিস) - কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম মানুষকে তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে।
বলা হবে ঃ আমি কি তোমাকে সুস্বাস’্য প্রদান করিনি, আমি কি তোমাকে ঠান্ডা
পানি পান করতে দেইনি ? (তিরমিযী) - জেনে রাখ, তিনটি জায়গা এমন হবে যেখানে কেউ কারো কথা মনে রাখবে না। একটি
হলো মীজানের পাল্লার কাছে যতক্ষণ সে নিশ্চিত না হবে যে তার আমলের পাল্লা
ভারী হয়েছে না হাল্কা। দ্বিতীয়টি হলো আমলনামা পাওয়ার দফতর যে পযর্ন্ত না সে
নিশ্চিত হবে উহা তাকে ডান হাতে দেওয়া হয়েছে না বাম হাতে ? তৃতীয়টি হলো
পুলসিরাত যখন উহাকে জাহান্নামের উপর স্থাপন করা হবে। -(আবু দাউদ শরীফ) - তোমাদের ভৃত্যরা তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করে
দিয়েছেন। সুতরাং যার ভাই তার অধীন হয় সে যেন তাকে তাই খাওয়ায়, যা সে নিজে
খায়, তাই পরিধান করায় যা সে নিজে পরিধান করে এবং তাকে যেন এমন কাজ করতে না
দেয়, যা করা তার জন্য খুবই কঠিন। যদি এমন কাজের ভার দিতেই হয়, তবে সে নিজেও
যেন তাকে সাহায্য করে। (মুসলিম , আবু দাউদ) - তোমরা তোমাদের সহধর্মিনীদের প্রতি হিতাকাঙখী হও। -(মুসলিম শরীফ)
- হে লোকসকল ! (পরকালের কঠিন শাস্তি সম্পর্কে) আমি যা জানি তা যদি তোমরা
জানতে, তবে অতিমাত্রায় ক্রন্দন করতে এবং অল্পই হাস্য-রস করার অবকাশ পাইতে।
নির্জন প্রান্তরে গিয়ে বুক চাপড়াইয়া গলা ফাটিয়ে রোদন করতে। (আল হাদিস) - যে ব্যক্তি নিজের খেয়াল-খুশি অনুযায়ী কাজ করে আবার আল্লাহ তা’আলার রহমতেরও আশা করে, সে একেবারেই বেআক্কেল। (আল হাদিস)
- জাহান্নামের একজন মাত্র ফেরেশতার শরীরে পৃথিবীর সমস্ত জ্বিন ও মানুষের সমান শক্তি রয়েছে। -(দুররে মনসুর)
- পাঁচটি গুনাহের পাঁচ রকম শাস্তি ঃ (১) যে জাতি ওয়াদা ভঙ্গ করে, আল্লাহ
তাদের ওপর শত্রুকে জয়ী করে করে দেন (২) যে জাতি আল্লাহর আইন ত্যাগ করে
মানুষের আইনে বিচার করে, তাদের মধ্যে দারিদ্র ও অভাব-অনটন বৃদ্ধি লাভ করে
(৩) যে জাতির মধ্যে অশ্লীলতা ও ব্যভিচার বৃদ্ধি পায়, তাদের ওপর প্লেগ ও
অন্যান্য মহামারী চাপিয়ে দেওয়া হয় (৪) যারা ওজনে কম দেয়, তাদেরকে দুভিক্ষের
শাস্তি দেওয়া হয় এবং (৫) যারা যাকাত দেয় না, তাদেরকে বৃষ্টি থেকে বঞ্চিত
রাখা হয়। (কুরতুবী) - যখন কেয়ামত আসবে আমার উম্মতের একটি দলকে আল্লাহ পাক পাখিদের ন্যায় পাখা ও
পালক দান করবেন যাতে ভর দিয়া তারা বেহেশতে ইতস্তত উড়ে বেড়াবে। তা দেখে
ফেরেশতারা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবেন ঃ তোমাদের পাপ-পূণ্যের হিসাব হয়েছে কি ?
দাঁড়িপাল্লায় তোমাদের আমলের ওজন করা হয়েছে কি ? তোমরা পুলসেরাত পার হয়ে
এসেছ কি না ? উত্তরে তারা বলবে ঃ আমরা এই সকল বিষয়ের কোন কিছূই দেখিতেও পাই
নাই। তখন ফেরেশতাগণ পুণরায় তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবেন ঃ তোমরা কোন শ্রেণীর
লোক ? তারা জবাব দিবে ঃ আমরা হযরত মোহাম্মদ (দঃ)-এর উম্মত। ফেরেশতারা
জিজ্ঞাসা করবেন ঃ তোমরা কি কি নেক কাজের দরুন এমন সৌভাগ্য ও মর্যাদা লাভ
করেছ ? তাঁরা বলবে ঃ আমাদের ভেতর দুটি অভ্যাস ছিল—(১) আল্লাহর ভয়ে ও
লজ্জায় আমরা নির্জন স্থানেও কোন পাপ কাজ করতাম না। (২) আল্লাহ তা’আলা অতি
সামান্য অন্ন-বস্ত্র যাকিছূ আমাদের দান করতেন আমরা তাতেই সন্তুষ্ট ও তৃপ্ত
থাকতাম। একথা শুনে ফেরেশতারা বলবেন ঃ তবে কেন এমন হবে না ? এমন সৌভাগ্য ও
মযার্দা তোমাদেরই প্রাপ্য। (আল হাদিস) - এমন একটা দুঃসময় আসবে যখন শাম ও ইরাকের লোকদের চারদিক থেকে অবরোধ করা
হবে। একই ধরনের অবরোধ সিরিয়াবাসীদের উপরও আরোপ করা হবে। জিজ্ঞেস করা হলো,
এই অবরোধ কাদের পক্ষ থেকে আরোপিত হবে ? বললেন- আহলে রোমের (খ্রীস্টানদের)
পক্ষ থেকে। অতঃপর আমার উম্মতের মধ্যে একজন খলীফার আবির্ভাব ঘটবে। তাঁর
নেতৃত্বে উম্মতের মধ্যে পুনর্জাগরণের সৃষ্টি হবে। সুখ-সমৃদ্ধিতে তারা
পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠবে। শেষ জমানায় ইসলাম তার প্রাথমিক অবস্থায় ফিরে যাবে।
ঈমানদার লোকদের আশ্রয়স’ল মদীনায় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়বে। (মুসতাদরাক) - তোমরা নিজেদের কোরবানীর পশুকে মোটাতাজা করো, কেননা সেটি পুলসেরাতে তোমাদের বাহন হবে। -(আল হাদিস)
- যে ব্যক্তি ফজরের নামাযের পর কথাবার্তা না বলে আল্লাহর জিকিরে মশগুল
থাকবে এবং সূর্যোদয়ের পর দু’রাকাত ইশরাকের নামায আদায় করবে তার সমস্ত গোনাহ
মাফ করে দেওয়া হবে যদিও তা সমুদ্রের ফেনা সমতুল্য হয়ে থাকে। -(মুসনাদে
আহমদ) - একজন অপরজনকে উঠিয়ে তার জায়গায় বসবে না। বরং তোমরা চেপে চেপে বসে পরে আগতদের জন্য জায়গা করে দাও। (বোখারী , মুসলিম)
- তোমরা সবাই আদমের সন্তান আর আদমকে বানানো হয়েছে মাটি দ্বারা। -(আল হাদীস)
- সৃষ্টি জগতের সকল মানুষই আল্লাহর পরিজন স্বরূপ। তাই আল্লাহর নিকট সেই
ব্যক্তি সর্বাধিক প্রিয় যে তাঁর পরিজনদের নিকট অধিক প্রিয়। -(আল হাদীস) - ফেরেশতারা মেঘমালা পযর্ন্ত অবতরণ করে এবং সেখানে তারা আল্লাহর
নির্দেশসমূহ বাস্তবায়ন করা সম্পর্কে পরস্পর আলোচনা করে। শয়তানরা এখান থেকে
গোপনে এগুলো শুনে অতীন্দ্রিয়বাদীদের কাছে পৌছে দেয় এবং তাতে নিজেদের পক্ষ
থেকে কাঁড়িকাঁড়ি মিথ্যা ঢুকিয়ে দেয়। (বোখারী) - সন্তান-সনততি হলো মানুষের কৃপণতা এবং কাপুরুষতার কারণ। (আল হাদিস)
- আমি ততক্ষণ পযর্ন্ত সন্তুষ্ট হব না যতক্ষণ পযর্ন্ত আমার উম্মতের একটি
লোকও জাহান্নামে থাকবে। আল্লাহ তা’আলা আমার উম্মত সম্পর্কে আমার সুপারিশ
গ্রহন করবেন এবং শেষ পযর্ন্ত জিজ্ঞাসা করবেন, হে মোহাম্মদ ! এখন কি আপনি
সন্তুষ্ট হয়েছেন ? আমি বলব, হে প্রভু ! আমি সন্তুষ্ট। -(আল হাদিস)
বিভাগঃ বাণী চিরন্তনী । এই পোষ্টটি ৩২৪০ বার পড়া হয়েছে
কোন মন্তব্য নেই