লিচু এর পুষ্টিমান
লিচু একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। লিচুর ত্বক কাঁটার মতো অমসৃণ। ফলটি ৪-৫ সেমি লম্বা, ডিম্বাকৃতির মতো দেখতে। পৃথিবীর সবচেয়ে সুস্বাদু ফলগুলোর মধ্যে লিচু অন্যতম। গন্ধ, রস ও স্বাদের মাধুর্য্যে লিচু দেশ-বিদেশে সমান জনপ্রিয়। বাংলাদেশে লিচুর জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। কারণ চমত্কার স্বাদ, রস ও সুগন্ধের পাশাপাশি ফলটিতে রয়েছে মানবস্বাস্থ্যের জন্য দরকারি বেশ কিছু খাদ্যপ্রাণ ও খনিজ পদার্থ।
বৃক্ষভিত্তিক ফলগুলোর মধ্যে লিচুতে পরিসৃত ফ্যাট ও সোডিয়ামের পরিমাণ খুবই কম এবং ফলটিতে কোনো ক্লোলেস্টরেল নেই। লিচুতে আছে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দৈনন্দিন ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণে ৯টি লিচুই যথেষ্ট। লিচুতে আছে পর্যাপ্ত ডায়াটারি ফাইবার, যা মানবদেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতে খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, লিচুতে আছে অলিগবল-এর পর্যাপ্ততা, যা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস অ্যাকশনে কার্যকর। এটি রক্তের প্রবাহ সঠিকভাবে সম্পন্ন হতে সাহায্য করে ও সূর্যের ক্ষতিকারক অতি বেগুনী রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে সুরক্ষা করে। লিচু অম্লজাতীয় ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম হওয়ায় এতে আছে ভিটামিন সি-এর পর্যাপ্ততা, যা মানবদেহে ক্ষতিকর জীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। প্রতি ১০০ গ্রাম লিচুতে শক্তি রয়েছে ২৭৬ কিলোজুল, কার্বোহাইড্রেট ০৬.৫ গ্রাম, ডায়াটারি ফাইবার ১.৩ গ্রাম. প্রোটিন ০.৪ গ্রাম, ভিটামিন সি ৭২ মি. গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫ মি. গ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১০ মি. গ্রাম, ফসফরাস ৩১ মি. গ্রাম. পটাসিয়াম ১৭০ মি. গ্রাম ও সোডিয়াম ৩ মি. গ্রাম।
লিচুতে যথেষ্ট খনিজপদার্থ যেমন পটাসিয়াম ও কপার পাওয়া যায়। পটাসিয়াম শরীরের কোষ, রক্তপ্রবাহ, হাটরেট নিয়ন্ত্রণ ও ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। এটা করোনারি হার্টের অসুখ ও স্ট্রোকের প্রতিরোধ করে। শরীরে রক্ত লোহিত কণিকা গঠনে কপার সহায়তা করে। লিচুতে বিদ্যমান খাদ্যপ্রাণ শরীরে রক্তের ঘাটতি পূরণ ও শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে। মানবদেহের ত্বকের সৌন্দর্যে উপকার পাওয়া যায় লিচুতে। তাছাড়া কফ, কাশি নিরাময় এবং টিউমারের নিরাময়ে কাজে দেয় লিচুতে বিদ্যমান ভিটামিন। লিচু ফল শিশুদের দ্রুত বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।